দশাননের এমন কিছু স্বপ্ন ছিল, যা আমাদের কল্পনারও অতীত
★★★দশাননের এমন কিছু স্বপ্ন ছিল, যা আমাদের কল্পনারও অতীত★★★
----------------------------------------------------------------------
----------------------------------------------------------------------
মহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এ রাবণকে এমন এক তুলিতে এঁকেছিলেন কবি বাল্মীকি, যাতে তাঁকে এক খলনায়ক বলে কিছুতেই মনে হয়না। সত্যি বলতে, রাবণের উপরে আরোপিত হয়েছে এমন কিছু বিরল গুণাবলি, যা সাধারণত মানুষের মধ্যে দেখা যায় না। তবে এটাও ঠিক, রক্ষরাজ রাবণ তো ‘মানুষ’ ছিলেন না। তাঁর জন্ম এবং সাধনা তাঁকে এক প্রবল পরাক্রমশালী ‘অর্ধ-দেবতা’ হিসেবেই তাঁকে স্থিত করে। ‘রামায়ণ’-এ রাবণকে এভাবেই দেখানো হয়েছে যে, তিনি পারেন না হেন কাজ নেই। কিন্তু কিছু চরিত্রদোষ তাঁকে নায়কের আসন থেকে চ্যুত করে এবং এক ট্র্যাজিক চরিত্র হিসেবেই সিদ্ধি দেয়। এই চারিত্রিক দুর্বলতাগুলিই রাবণকে তাঁর বেশ কিছু সংকল্পের বাস্তবায়নে বাধা দেয়। বা আরও খোলসাকরে বললে, চূড়ান্ত আত্মম্ভরিতার কারণে এমন কিছু সংকল্প রাবণ করে বসেন, যা প্রবল পরাক্রমশালী হওয়া সত্ত্বেও তিনি পূরণ করতে ব্যর্থ হন। কী সেই সব কাজ, যা রাবণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু
প্রবল পরাক্রান্ত দশানন চেয়েছিলেন একটা সম্পূর্ণ নতুন ‘ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ বানাতে। তার অনেকগুলিই ছিল প্রকৃতি-বিরুদ্ধ। রাবণ চেয়েছিলেন মানুষ ঈশ্বরের উপাসনা বন্ধ করুক। তিনি ভেবেছিলেন, এতে তিনিই দেবতার স্থান অধিকার করতে পারবেন। কিন্তু তাঁর এই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
• সারা জীবন ধরে অসংখ্য যুদ্ধ করেছিলেন রাবণ। প্রভূত রক্তপাত তাঁকে ভাবিত করে তোলে। তিনি চান রক্তের রং বর্ণহীনহয়ে যাক, যাতে তাঁর রক্তলোলুপতাকে কেউ আঙুল তুলে দেখাতে পারবে না। বলাই বাহুল্য এই ইচ্ছা পূরণ হয়নি।
• স্বর্ণলঙ্কাধিপতি রাবণের বিশেষ অবসেশন ছিল সোনার প্রতি। তিনি চেয়েছিলেন, সোনার সুগন্ধি হয়ে উঠুক, যাতে তাকে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। প্রকৃতি-বিরুদ্ধ এই আকাঙ্ক্ষাও পূরণ হয়নি।
• রাবণ সরাসরি স্বর্গে পৌঁছনোর জন্য একটা সিঁড়ি তৈরি করতেচেয়েছিলেন। সিঁড়িটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
• রাবণ তুমুল সুরাপায়ী ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, মদ দুর্গন্ধমুক্ত হোক। এই কামনাও পূরণ হয়নি।
• রাবণের গাত্রবর্ণ ছিল কালো। তিনি চেয়েছিলেন পৃথিবীসুদ্ধ পুরুষের গায়ের রং ফরসা হয়ে যাক। কোনও মহিলা যাতে আর পুরুষের গাত্রবর্ণ নিয়ে মজা করতে না পারে।
• সমুদ্রবেষ্টিত লঙ্কায় থাকতে থাকতে রাবণের মনে হয়েছিল, সমুদ্রের জল যদি মিষ্টি হয়ে যায়, তাহলে পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে। তাঁর এই ইচ্ছাও অপূর্ণ থেকে যায়।
• সর্বোপরি, রাবণ চেয়েছিলেন সীতা তাঁর প্রতি অনুরক্তা হয়ে উঠুন। তাঁর এই আকাঙ্ক্ষাই তাঁর চূড়ান্ত পতন।
No comments