আমরা কেন মূর্তি বা প্রতিমা পূজা করি ?



আমরা কেন মূর্তি বা প্রতিমা পূজা করি ?




আমরা কেন মূর্তি বা প্রতিমা পূজা করি ?
প্রশ্নটি করলে আমরা উত্তর দিতে পারি না। এ আমাদের দুর্ভাগ্য! যুধিষ্ঠির মহারাজকে ধর্মরূপী যক্ষ প্রশ্ন করেছিল- সবচেয়ে চঞ্চল কী? 
যুধিষ্ঠির মহারাজ উত্তর মন।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায়ও বলা হয়েছে- ‘চঞ্চলং হি মনঃ কৃষ্ণ প্রমাথি বলবদ্দৃঢ়ম্।
তস্যাহং নিগ্রহং মন্যে বায়োরিব সুদুষ্করম্ ॥
অর্থাত হে কৃষ্ণ! মন স্বভাবতঃ চঞ্চল, মোহকারী বায়ুকে যেমন নিগ্রহ করা দুষ্কর, স মনের নিগ্রহ করাও কঠিন বলে মনে করি’(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, ৬/৩৪)। আর এ চঞ্চল মনকে স্থির করার জন্যই প্রতিমাপূজা বা মূর্তিতে পূজা করা হয়।
মূর্তি বা প্রতিমা ঈশ্বরের বসার স্থান মা মূর্তিপূজায় বৈদিক ঋষিগণ মাটির প্রতিমা দ্বারা প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও চক্ষু দানের মাধ্যমে চিন্ময়ী করে, পূজার বিধান দিয়েছে ঋষিগণের এ সাহসের গর্ব আমরাই করতে পারি মূর্তিপূজা বিষয়ে চিকাগো ধর্মসভায় স্বামী বিবেকানন্দ মনোবিজ্ঞানের সাহায্যে বুঝিয়েছিলেন-`We just cannot anythings without metarialimage' বস্তুগত প্রতিচ্ছবি ছাড়া আমরা কিছু চিন্তা করতে পারি না। ‘হিন্দুরা মূর্তিপূজক ন আদর্শের পূজারী’। স্বামীজী এ কথাও বলেছেন- ‘পুতুল পূজা করে না হিন্দু কাঠ মাটি দিয়ে গড়া মৃন্ময়ী মাঝে চিন্ময়ী হেরে হয়ে যাই আত্মহারা।’ স্বামী প্রণবানন্দজী বলেছেন- ‘কাঠের পুতুলে পুতুলে প্রাণ সঞ্চার করে আমি আমার অভিপ্রেত করব। আমার শক্তি ও আশীর্বাদ তাদের মধ্যে শক্তি সঞ্চার করবে- যারা দেশের জন্য আর দশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে।’ আবা শিক্ষা গ্রহণের জন্য বলেছেন- ‘হিন্দু! তুমি ক না- তুমি শক্তির পূজক, মহাশক্তির উপাসক? তো সেই শক্তির সাধনা কোথায়? শিবের হাতে ত্র তাহা দেখিয়া তুমি কী চিন্তা করিবে? শ্রীকৃষ্ণ হাতে সুদর্শন, তাহা দেখিয়া তুমি কী ভাবনা ভাবিবে? কাল হাতে রক্তাক্ত খড়গ, দুর্গার হাতে দশপ্রহরণ, তাহা দেখিয়া তুমি কী শিক্ষা লাভ করিবে? মহাশক্তির সাধনা করিয়া মানুষ দুর্বল হইতে পারে কি? একবার ধীর স্থির হইয়া চিন্তা কর।’ মূর্তিপূজা সবাই করে। কোনো আস্তিক ব্যক্তি যদি মূর্তিপূজায় অনিচ্ছু তবু তাঁর দ্বারা প্রকারান্তরে মূর্তিপূজা হয়ে কেমন করে ভারত বর্ষের জাতীয় হিন্দু সমাজ সমিতি ।বলে থাকে- ‘আপনি বেদ মানেন, আপনি সকলে সমিতির পতাকা তলে একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারেন।’ এ কথাও এক প্রকার মূর্তিপূজা। কীভাবে? ‘তিনি যদি বেদাদি গ্রন্থ মানেন এবং সে অনুযায়ী চলতে মনস্থ করেন তা হলে প্রকারান্তরে তার দ্বারা মূর্তিপূজা কারণ বেদও (লিখিত পুস্তক হিসেবে) মূর্তিই।ইত্যাদি গ্রন্থকে সম্মান জানানোও একপ্রকার মূর্তিপূজা’। ‘আমরা যখন কোনো বিদ্বান ব্যক্তিকে সম্মান জানাই, তাতে আমরা তাঁর বিদ্যাকেই সম্মান জানালাম, রক্তমাংসের শরীরটিকে নয়। এইরূপই যে ব্যক্তি মূর্তিতে ভগবানকে মানেন, তাঁরা আসলে ভগবানকেই সম্মান জানিয়ে থাক মূর্তিকে নয়।’ (মূর্তিপূজা- স্বামী রামসুখদাস) সুতরাং ঐ অর্থে সবাই মূর্তির পূজক। লক্ষণীয় য পূজায় প্রথমেই ঘট বসানো হয় যা অতীব বিজ্ঞ সম্মত। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুত, ব্যোম (মাটি, জ বাতাস ও আকাশ) এই পঞ্চতত্ত্বের সমন্বয় তথা সৃষ্টির প্রথম প্রাণীর আবির্ভাব যে জলে, তারই আবা জানানো হয় ঐ ঘটে। ঘট এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ও ম দেহভাণ্ডের প্রতীক। ঘট, পট, মূর্তি, বৃক্ষ, পা পাখি সবার মধ্যেই সনাতনধর্মাবলম্বীগণ ঈশ্ দর্শন করেন এবং গুণাগুণ বিচার করে হাজার বছর পূর্বেই ঋষিগণ পূজার বিধান দিয়েছেন। ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণ, পশু-পাখি সরকারও এখন তত্‍পর।

1 comment:

  1. মূর্তি পূজা করে অধম যারা, যারা এখনও উন্নত হয় নি,উত্তম তারাই যারা ব্রহ্ম ভাব নিয়ে চলে, নিরাকার ঈশ্বরের সাধনা করেন!

    ReplyDelete

বাস্তুদোষ কাটান ।ও।বিদ্যা শিক্ষার উন্নতির জন্য বাড়িতে দক্ষিণা বর্তী শঙ্খ রাখুন উন্নতি আসবে।

বাস্তুদোষ কাটান ।ও।বিদ্যা শিক্ষার উন্নতির জন্য বাড়িতে দক্ষিণা বর্তী শঙ্খ রাখুন উন্নতি আসবে। https://youtu.be/fFBQjxcQzxc https://youtu....

Theme images by RBFried. Powered by Blogger.