গায়ত্রী মন্ত্র কি ?
গায়ত্রী মন্ত্র কি ? -------
**************
ব্রহ্মের থেকে 'ওঁ' ( প্রণব ) , '' ওঁ " থেকে
" গায়ত্রী '' বা '' সবিতা " আর " গায়ত্রী " থেকে '' বেদ " এর সৃষ্টি। কাজেই " গায়ত্রী " হলো সকল বেদের বীজ।
গায়ত্রী মন্ত্র হল বৈদিক হিন্দুধর্মের একটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্র। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে , বেদের অন্যান্য মন্ত্রের মতো গায়ত্রী মন্ত্রও " অপৌরষেয় " ( অর্থাৎ কোনো মানুষের দ্বারা রচিত নয় )
এবং এক ব্রহ্মর্ষির কাছে ( গায়ত্রী মন্ত্রের ক্ষেত্রে ব্রহ্মর্ষি বিশ্বামিত্র ) প্রকাশিত। এই মন্ত্রটি বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত।
এটি ঋগ্বেদের একটি সূক্ত। গায়ত্রী মন্ত্র গায়ত্রী
ছন্দে রচিত।
হিন্দুধর্মে গায়ত্রী মন্ত্র ও এই মন্ত্রে উল্লিখি দেবতাকে অভিন্ন জ্ঞান করা হয়।
তাই এই মন্ত্রের দেবীর নামও গায়ত্রী।
গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে শুধু
পূজাই হয় না , গায়ত্রী মন্ত্রকেও পূজা করা হয়।
গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে হিন্দু দেবতা সবিত্রীকে আবাহন করা হয়।
তাই গায়ত্রী মন্ত্রের অন্য নাম " সাবিত্রী মন্ত্র "।
সাবিত্রীর ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা অনুসারে এই মন্ত্র সূর্যপূজা , যোগ , তন্ত্র বা শাক্তধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
মন্ত্রটির শুরুতে ওঁ-কার এবং " মহাব্যাহৃতি " নামে পরিচিত " ভূর্ভুবঃ স্বঃ " শব্দবন্ধটি পাওয়া যায়।
এই শব্দবন্ধটি তিনটি শব্দের সমষ্টি ভূঃ , ভূবঃ ও স্বঃ।
এই তিনটি শব্দ দ্বারা তিন জগতকে বোঝায়।
ভূঃ বলতে বোঝায় মর্ত্যলোক ,
ভূবঃ বলতে বোঝায় স্বর্গলোক এবং
স্বঃ হল স্বর্গ ও মর্ত্যের সংযোগরক্ষাকারী এক লোক।
বেদে যে সপ্তভূমি বা সাত জগতের উল্লেখ
আছে , এগুলি তার মধ্যে তিনটি জগতের নাম। ধ্যান অনুশীলনের ক্ষেত্রে ভূঃ , ভূবঃ ও স্বঃ - এই তিন লোক চেতন , অর্ধচেতন ও অচেতন - এই তিন
স্তরের প্রতীক।
বৈদিক সাহিত্যে বহুবার গায়ত্রী মন্ত্র উল্লিখিত হয়েছে।
হিন্দুধর্মে উপনয়ন সংস্কারের সময় গায়ত্রী
দীক্ষা একটি প্রধান অনুষ্ঠান এবং হিন্দু দ্বিজ সম্প্রদায়ভুক্তেরা এই মন্ত্র নিত্য জপ করেন। আধুনিক হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের ফলে গায়ত্রী মন্ত্র নারী ও সকল বর্ণের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে।
গায়ত্রী মন্ত্র ঃ---------
**************************
" ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ
তৎসবিতুর্বরেণ্যং
ভর্গো দেবস্য
ধীমহিধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ। "
গায়ত্রী মন্ত্রের দেবতা সবিতা।
ঋগ্বেদের ২য় মন্ডলের ৩৮ সূক্তের ৭ থেকে ১১নং মন্ত্রে সূর্য বা সবিতাকে সকল শক্তির উৎস বলে তার স্তুতি করা হয়েছে।
এই মন্ত্রে বলা হয়েছে , হে সবিতা , তুমি অন্তরীক্ষ , জল , স্থল সকল কিছু সৃষ্টি করেছ।
তুমি সকল ভূত , পশুপাখী , স্থাবর জঙ্গম
ইত্যাদিকে স্ব স্ব স্থানে রেখেছ।
ইন্দ্র , বরুণ , মিত্র , অর্য্যমা বা রুদ্র সবাই তোমার
শক্তিতে বলীয়ান।
কেউ তোমাকে হিংসা করে না।
হে পরমেশ্বর , তোমার দুতিমান জ্যোতিকে
( অর্থাৎ , সকল প্রকাশ যুক্তশক্তি এবং অপ্রকাশিত
অতিন্দ্রিয় শক্তিকে )
আমরা নমষ্কার করি। তুমি সকলের কল্যাণ কর।
আমাদের জন্যে যেন সকল কিছু শুভ হয়।
এটাই এই গায়ত্রী মন্ত্রের দেবতা সবিতার তাৎপর্য।
বেদভাষ্যকার সায়নাচার্য গায়ত্রী মন্ত্রে সূর্য ও
সবিতার দুই রকম অর্থ করেছেন। তাঁর মতে এই
মন্ত্রে সবিতা হল , সকল কারণের কারণ সেই
সচ্চিদানন্দ নিরাকার পরম ব্রহ্ম বা জগত স্রষ্টা।
" সু " ধাতু থেকে সবিতৃ নিষ্পন্ন হয়েছে , যায় জন্যে
সবিতার অর্থ এক্ষেত্রে প্রসবিতা বলে উল্লিখিত
হয়েছে। নিরুক্তিকার যস্ক এর অর্থ করেছেন
" সর্ব্বস্য প্রসবিতা। "
অনুবাদঃ
গায়ত্রী মন্ত্রটির সরলার্থ ,
সর্বলোকের প্রকাশক
সর্বব্যাপী সবিতা মণ্ডল জগৎ
প্রসবকারী সেই পরম দেবতার
বরেণ্য জ্ঞান ও শক্তি ধ্যান করি ;
যিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি প্রদান
করেছেন। ********
**************
ব্রহ্মের থেকে 'ওঁ' ( প্রণব ) , '' ওঁ " থেকে
" গায়ত্রী '' বা '' সবিতা " আর " গায়ত্রী " থেকে '' বেদ " এর সৃষ্টি। কাজেই " গায়ত্রী " হলো সকল বেদের বীজ।
গায়ত্রী মন্ত্র হল বৈদিক হিন্দুধর্মের একটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্র। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে , বেদের অন্যান্য মন্ত্রের মতো গায়ত্রী মন্ত্রও " অপৌরষেয় " ( অর্থাৎ কোনো মানুষের দ্বারা রচিত নয় )
এবং এক ব্রহ্মর্ষির কাছে ( গায়ত্রী মন্ত্রের ক্ষেত্রে ব্রহ্মর্ষি বিশ্বামিত্র ) প্রকাশিত। এই মন্ত্রটি বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত।
এটি ঋগ্বেদের একটি সূক্ত। গায়ত্রী মন্ত্র গায়ত্রী
ছন্দে রচিত।
হিন্দুধর্মে গায়ত্রী মন্ত্র ও এই মন্ত্রে উল্লিখি দেবতাকে অভিন্ন জ্ঞান করা হয়।
তাই এই মন্ত্রের দেবীর নামও গায়ত্রী।
গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে শুধু
পূজাই হয় না , গায়ত্রী মন্ত্রকেও পূজা করা হয়।
গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে হিন্দু দেবতা সবিত্রীকে আবাহন করা হয়।
তাই গায়ত্রী মন্ত্রের অন্য নাম " সাবিত্রী মন্ত্র "।
সাবিত্রীর ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা অনুসারে এই মন্ত্র সূর্যপূজা , যোগ , তন্ত্র বা শাক্তধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
মন্ত্রটির শুরুতে ওঁ-কার এবং " মহাব্যাহৃতি " নামে পরিচিত " ভূর্ভুবঃ স্বঃ " শব্দবন্ধটি পাওয়া যায়।
এই শব্দবন্ধটি তিনটি শব্দের সমষ্টি ভূঃ , ভূবঃ ও স্বঃ।
এই তিনটি শব্দ দ্বারা তিন জগতকে বোঝায়।
ভূঃ বলতে বোঝায় মর্ত্যলোক ,
ভূবঃ বলতে বোঝায় স্বর্গলোক এবং
স্বঃ হল স্বর্গ ও মর্ত্যের সংযোগরক্ষাকারী এক লোক।
বেদে যে সপ্তভূমি বা সাত জগতের উল্লেখ
আছে , এগুলি তার মধ্যে তিনটি জগতের নাম। ধ্যান অনুশীলনের ক্ষেত্রে ভূঃ , ভূবঃ ও স্বঃ - এই তিন লোক চেতন , অর্ধচেতন ও অচেতন - এই তিন
স্তরের প্রতীক।
বৈদিক সাহিত্যে বহুবার গায়ত্রী মন্ত্র উল্লিখিত হয়েছে।
হিন্দুধর্মে উপনয়ন সংস্কারের সময় গায়ত্রী
দীক্ষা একটি প্রধান অনুষ্ঠান এবং হিন্দু দ্বিজ সম্প্রদায়ভুক্তেরা এই মন্ত্র নিত্য জপ করেন। আধুনিক হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের ফলে গায়ত্রী মন্ত্র নারী ও সকল বর্ণের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে।
গায়ত্রী মন্ত্র ঃ---------
**************************
" ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ
তৎসবিতুর্বরেণ্যং
ভর্গো দেবস্য
ধীমহিধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ। "
গায়ত্রী মন্ত্রের দেবতা সবিতা।
ঋগ্বেদের ২য় মন্ডলের ৩৮ সূক্তের ৭ থেকে ১১নং মন্ত্রে সূর্য বা সবিতাকে সকল শক্তির উৎস বলে তার স্তুতি করা হয়েছে।
এই মন্ত্রে বলা হয়েছে , হে সবিতা , তুমি অন্তরীক্ষ , জল , স্থল সকল কিছু সৃষ্টি করেছ।
তুমি সকল ভূত , পশুপাখী , স্থাবর জঙ্গম
ইত্যাদিকে স্ব স্ব স্থানে রেখেছ।
ইন্দ্র , বরুণ , মিত্র , অর্য্যমা বা রুদ্র সবাই তোমার
শক্তিতে বলীয়ান।
কেউ তোমাকে হিংসা করে না।
হে পরমেশ্বর , তোমার দুতিমান জ্যোতিকে
( অর্থাৎ , সকল প্রকাশ যুক্তশক্তি এবং অপ্রকাশিত
অতিন্দ্রিয় শক্তিকে )
আমরা নমষ্কার করি। তুমি সকলের কল্যাণ কর।
আমাদের জন্যে যেন সকল কিছু শুভ হয়।
এটাই এই গায়ত্রী মন্ত্রের দেবতা সবিতার তাৎপর্য।
বেদভাষ্যকার সায়নাচার্য গায়ত্রী মন্ত্রে সূর্য ও
সবিতার দুই রকম অর্থ করেছেন। তাঁর মতে এই
মন্ত্রে সবিতা হল , সকল কারণের কারণ সেই
সচ্চিদানন্দ নিরাকার পরম ব্রহ্ম বা জগত স্রষ্টা।
" সু " ধাতু থেকে সবিতৃ নিষ্পন্ন হয়েছে , যায় জন্যে
সবিতার অর্থ এক্ষেত্রে প্রসবিতা বলে উল্লিখিত
হয়েছে। নিরুক্তিকার যস্ক এর অর্থ করেছেন
" সর্ব্বস্য প্রসবিতা। "
অনুবাদঃ
গায়ত্রী মন্ত্রটির সরলার্থ ,
সর্বলোকের প্রকাশক
সর্বব্যাপী সবিতা মণ্ডল জগৎ
প্রসবকারী সেই পরম দেবতার
বরেণ্য জ্ঞান ও শক্তি ধ্যান করি ;
যিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি প্রদান
করেছেন। ********
No comments