মন্দিরে দেবী ছিন্নমস্তার মূর্তি থেকে বেরোতে দেখা যায় রক্ত
মন্দিরে দেবী ছিন্নমস্তার মূর্তি থেকে বেরোতে দেখা যায় রক্ত
★★★★★★★★★★★★★★★★★★★
দশমহাবিদ্যার অন্যতম দেবী ছিন্নমস্তা৷ তাঁর এক হাতে থাকে তাঁর নিজের ছিন্ন মুন্ড, অপর হাতে থাকে একটি কাটারি৷ ছিন্নমস্ত আত্মবলিদান ও কুণ্ডলিনী জাগরণের দেবী৷ এই মন্দিরকে ঘিরেই রয়েছে বেশ কিছু রহস্যজনক কাহিনী৷ ঝাড়খন্ডের রাঁচি থেকে ৮০কিলোমিটার দূরে রয়েছে এমনই একটি শক্তিপীঠ৷ যার গল্প শুনলে আপনি শিহরিত হবেনই৷
ঝাড়খন্ডের রাজরাপ্পাতে এই ছিন্নমস্তার মন্দিরটি অবস্থিত৷ দামোদর এবং ভৈরবী নদী পার করেই এই মন্দিরটিতে আসতে হয়৷ পদ্মের উপরে কামদেব এবং রতির উপরে ছিন্নমস্তার মূর্তিটি রয়েছে৷ কথিত আছে, এই মন্দিরের মূর্তি থেকে অনবরত রক্ত বেরোতে থাকে৷ এই কারণেই এই মূর্তিটি বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত৷ অসমের পরই এই মন্দিরের ছিন্নমস্তার মূর্তিটি সবথেকে বড়৷ এই মন্দিরের মূর্তিটি থেকেই অনবরত রক্ত পড়তে থাকে৷ ছিন্নমস্তার মূর্তির পাশে থাকা দুই ডাকিনী যোগীনী ছিন্নমস্তার গলা থেকে বেরিয়ে আসা সেই রক্তপান করে৷ এই মন্দিরটি দেখতে দূর দূরান্ত এমনকি বিদেশ থেকেও বহু লোক আসেন৷ এই মন্দিরের ভিতরে ঢুকলেই এক অজানা ভয় আপনাকে গ্রাস করবে৷
এই এলাকায় এই সিধি পীঠ ছাড়াও রয়েছে আরও বিখ্যাত বেশ কিছু মন্দির৷ এগুলির মধ্যে রয়েছে মহাকালী মন্দির, সূর্য মন্দির, দশমহাবিদ্যা মন্দির, বাবাধাম মন্দির৷ ছিন্নমস্তার মন্দিরের পাশেই রয়েছে দুটি উষ্ণ জলাধার৷ কথিত আছে, এই নদীর জল খুবই শুদ্ধ৷ এমনকি এই নদীর জল অনেকরকমের রোগ বিরোগ দূর করতেও সহায়তা করে৷ এছাড়াও পুরাণ মতে, এই মন্দিরটি রক্ষা করে রুদ্র মহাদেব৷ যা শিবেরই একটি রূপ৷
তান্ত্রিক ও তিব্বতি বৌদ্ধধর্মে ছিন্নমস্তা এক জনপ্রিয় দেবী৷ দূর্গাসুরা ছিন্নমস্তা এবং অন্যান্য মহাবিদ্যার মধ্যে রয়েছে মাতঙ্গী, ধূমাবতী, শোদাশি এবং কালি যেগুলি দূর্গারই অবতার৷ বৌদ্ধধর্মশাস্ত্রে বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডার একটি জন্মবৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে৷ কৃষ্ণাচার্যের শিষ্যা ছিলেন দুই বোন মেখলা ও কনখেলা৷ তাঁরা ছিলেন মহাসিদ্ধা৷ তারা নিজেদের মাথা কেটে গুরুকে উপহার দেন৷ বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডা ও হিন্দু ছিন্নমস্তা একই দেবী৷ হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, সপ্তম শতাব্দীতে পূজিচ বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডা দেবীই হিন্দু ছিন্নমস্তার উৎস৷ প্রানতোশিনী তন্ত্র, এসভিতন্ত্রা তন্ত্র এবং শক্তিসামগামা তন্ত্রতে এর কথা উল্লেখ হয়েছে৷ ছিন্নমস্তা কুণ্ডলিনী শক্তি জাগরণেরও প্রতীক৷
।।সংগৃহিত।।
No comments